Why bangladeshi Men Are Becoming Weaker

বাংলাদেশের মোট মেইল পপুলেশন ৮৭.৩৯ মিলিয়ন। সিম্পিং, লো টেস্টোস্টেরন, অ্যাডিকশন, অনলাইন বেটিং, ল্যাক অফ স্কিলস, মেন্টাল উইকনেস আর মোস্ট কমন ইস্যু ইন বাংলাদেশ রাইট নাউ।

কফির কাপের পাশে সোফায় বসে এক ক্লিকেই পৃথিবী ভ্রমণ, কিংবা কল অফ ডিউটি বা ফোর্টনাইট এর মত ভিডিও গেমস এর মাধ্যমে যুদ্ধের মাঠটি যেন এখন সোজা আমাদের বসার ঘরে চলে এসেছে। আর এইদিকে পর্ণের মাধ্যমে সেক্সুয়াল রেভোলিউশনের লীলাখেলা তো চলছেই।

কিন্তু সবচেয়ে হতবাক করা বিষয়টি কি জানেন? আজকাল মেন্টাল উইকনেস, কমফোর্ট অ্যাডিকশন আর ইনস্ট্যান্ট গ্র্যাটিফিকেশন এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে অনেকেই এগুলোকে এখন নরমাল বিহেভিয়ার বলে ধরে নিচ্ছে। ইস্যুগুলোকে আমরা এতটাই সেনসিটিভ করে ফেলছি যে অনেকের কাছেই এগুলো নিয়ে কথা বলা এখন অকওয়ার্ড বা আনকমফোর্টেবল মনে হয়।

এদিকে সমাজ যেন নীরব, মিডিয়া এখন ব্যস্ত পরীমনির স্বামী খুঁজতে কিংবা কখনো প্রিন্স মামুনের বউ খুঁজে দিতে। এই বিষয়ে না আছে কোন রিসার্চ, না আছে কোন ইনভেস্টিগেশন। অথচ ধীরে ধীরে পুরো জেনারেশন এই একটা ইনভিজিবল ট্র্যাপের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে। মহামারি ছড়িয়ে পড়ছে জেন জি থেকে জেন আলফা পর্যন্ত।

এসব নিয়ে এখন কথা না বললে সামনের দিনে অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে। তাই আজ আমরা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছি। আজকের ভিডিওতে আমরা এমন একটা সত্য উদ্ঘাটন করতে যাচ্ছি যা হয়তো আপনার পুরো দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতে পারে। জানতে চলেছেন এমন কিছু যা আপনি আগে কখনো জানেননি। এমন কিছু যা আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে, বলতে বাধ্য করবে।

সামটাইম রিয়েলিটি ইজ স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন। আমাদের পূর্বের প্রজন্মগুলো কোন না কোন সময়ে নানা রকম বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়ে গেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে যুদ্ধ পরবর্তী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি, দারিদ্রতা, পরিবেশ দূষণ, অস্থিতিশীল রাজনীতি এবং টালমাটাল অর্থনীতির কারণে বিপর্যস্ত হয়েছে কোন না কোন জেনারেশন। তাছাড়া স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব অর্জনের লক্ষ্যে অনেক জাতি তখনো লড়ে যাচ্ছিল নিজের সর্বস্ব বিসর্জন দিয়ে। ফলে বিগত প্রজন্ম প্রতিনিয়ত লড়াই করেছে এবং তাদের আত্মত্যাগের ফসল ভোগ করছে এই জেনারেশন জি।

সেই হিসেবে চিন্তা করে দেখলে এই প্রজন্মটি হতে পারতো বিগত প্রজন্মের তুলনায় সবথেকে বেশি সম্ভাবনাময়। শিক্ষা, সাহিত্য, শিল্প, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদিতে তারা হতে পারতো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য এদের মধ্যে তেমন কোন আভাস কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। সবথেকে খারাপ ব্যাপারটি হলো এরা প্রতিনিয়ত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। হচ্ছে মানসিকভাবে প্রচন্ড রকমের ডিপ্রেসড।

আজকের যুবকদের দিকে তাকালে স্পষ্ট তারা আগের প্রজন্মের মতো আর নেই। 20 বছর আগে যারা কলেজে পড়তেন তারা ছিলেন এনার্জেটিক, স্ট্রং, সেলফ কনফিডেন্ট। তাদের সামনে ছিল এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, একটা MISSION, একটা অটুট বিশ্বাস। তারা যেকোন বাধায় অতিক্রম করতে পারতেন। তবে আজ পরিস্থিতি কেন যেন পুরোপুরি উল্টো।

আপনি হয়তোবা একটা কাজ করছেন, কেন করছেন, কিভাবে করছেন কিছুই আপনি জানেন না। আপনি মেন্টালি উইক। কমফোর্ট জোনেই সবসময় থাকতে চান। বেশিরভাগ সময় আপনি ডিপ্রেসড, হার্ট ব্রোকেন, ফ্রাস্ট্রেটেড এন্ড ইউ আর লস্ট হোয়েন ইট কামস টু দ্য পারপাস অফ লাইফ। এসব কেন হচ্ছে, কি কারণে হচ্ছে অনেকেরই জানা নেই।

আসলে আমরা এক ধরনের হরমোনাল যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আর এর মূল হোতা এক দানবীয় শক্তি—টেস্টোস্টেরন। একটি শক্তিশালী হরমোন যা আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে ঝড় তোলার ক্ষমতা রাখে এবং আমাদের জীবনচক্রের প্রতিটি দিকই একেবারে বদলে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। শারীরিক পরিবর্তন থেকে মানসিক অবস্থান, সম্পর্কের ধরণ থেকে সাধারণ আচরণ, সবকিছুই যেন এই টেস্টোস্টেরন বাবাজির খেলা। আসুন জানার চেষ্টা করি কিভাবে এই রহস্যময় হরমোন আমাদের জীবন এবং শরীরের প্রতিটি পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে।

টেস্টোস্টেরন প্রাইমারি মেল সেক্স হরমোন এন্ড অ্যান্ড্রোজেন ইন মেল। এটা শুধু হরমোন নয়, এটি হল সেই ফুয়েল যা আমাদেরকে একজন বয় থেকে ম্যানে পরিণত করে। প্রধানত এটি একটি পুরুষ হরমোন। টেস্টোস্টেরন মহিলাদের মধ্যেও কম পরিমাণে পাওয়া যায়। পুরুষদের তুলনায় প্রায় সাত থেকে আট গুণ কম। কন্ঠ ভারী হওয়া, দাড়ি গজানো, শরীরের গঠন বদলে যাওয়া মূলত টেস্টোস্টেরনের কাজ। প্রবাবলি অল ইউ নো এবাউট টেস্টোস্টেরন। আপনাকে জানানো হয়নি এই হরমোনাল হেলথের ব্যাপারে। আপনি শুধু জানেন টেস্টোস্টেরন মাসল।

এই হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের এনার্জি, মুড, কনফিডেন্স। এমনকি ডিজায়ার টু উইন। একজন পুরুষের সাহস, ইচ্ছাশক্তি, প্রতিযোগিতার মানসিকতা সবকিছুর সাথেই জড়িয়ে আছে টেস্টোস্টেরন।

ফোর্বসের একটা রিপোর্ট অনুযায়ী আজ থেকে 40 বছর আগে 60 বছরের এক লোকের যে টেস্টোস্টেরন লেভেল ছিল এখন 30 বছরের একটা লোকের থাকে অনেকটা সেইম। এটা একটা ভয়ানক রিপোর্ট। যা 2017 সালে প্রকাশিত হয়। বলে 1973 থেকে 2011 সাল পর্যন্ত পুরুষদের শুক্রাণু উৎপাদন 50 থেকে 60% কমে গেছে। এই পতন শুধুমাত্র টেস্টোস্টেরন নয় বরং শরীরের বিভিন্ন অংশের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করছে। এটি যদি চলতে থাকে তবে আগামী কয়েক দশকে পুরুষদের জন্য কি অপেক্ষা করছে একবার চিন্তা করুন।

এত বড় ডাউনফলের পেছনে কারণ ইনস্ট্যান্ট গ্র্যাটিফিকেশন। এই শব্দটা আজকের যুগের সাথে মিলে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্রযুক্তি সবকিছু এখন আমাদের হাতের মুঠোয় আর আমরা প্রতিদিন খুঁজে বের করছি সেই তাৎক্ষণিক আনন্দ। সহজে আনন্দ বা স্বস্তি পেতে চায়। চাই এখনই কোনো অপেক্ষা বা পরিশ্রম ছাড়াই।

আজকের সময় প্রযুক্তি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার দাপটে আমাদের ডোপামিন সিস্টেম পুরোপুরি বদলে গেছে। কখনো কি ভেবেছেন আগে যেখানে আমরা কঠোর পরিশ্রমের পর সফলতার আস্বাদ পেতাম সেখানে এখন এক্সট্রিমলি আমরা বিনোদন, লাইক, কমেন্ট সবকিছু পেয়ে যাচ্ছি। এই ইনস্ট্যান্ট গ্র্যাটিফিকেশন আমাদের মস্তিষ্ককে শেখাচ্ছে। কঠোর পরিশ্রম না করেও তো সুখ পাওয়া সম্ভব।

তবে সমস্যা শুধু আমাদের নয়, এটা পৃথিবীর আরো অনেক জায়গায় ঘটছে। আর সেই জায়গায় জি মাইকেল হফ এর বিখ্যাত উক্তি মনে পড়ে। হার্ড টাইমস ক্রিয়েট স্ট্রং ম্যান, স্ট্রং ম্যান ক্রিয়েট গুড টাইমস। গুড টাইমস ক্রিয়েট উইক ম্যান, উইক ম্যান ক্রিয়েট হার্ড টাইমস।

তাহলে যদি একটু পেছনে ফিরে তাকাই একসময় আমরা ব্রিটিশদের গোলামী করছিলাম। সেগুলো ছিল হার্ড টাইমস। তবে তখন কিছু স্ট্রং ম্যান উঠে এসেছিল যারা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। ফলে আমাদের গুড টাইম শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই গুড টাইম থেকেই উইক ম্যান যারা আবারো হার্ড টাইম সৃষ্টি করছে।

আর এই হার্ড টাইমে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়ায় একজন পুরুষের মেন্টাল হেলথের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। যেমন লো সেলফ এস্টিম। টেস্টোস্টেরন একজন পুরুষের ভেতরের সাহস আর আত্মবিশ্বাসে জ্বালানি যোগায় এর পরিমাণ কমে গেলে সে নিজেকে দুর্বল অক্ষম বা নট গুড এনাফ মনে করতে শুরু করে। ডিপ্রেশন এন্ড স্যাডনেস। গবেষণায় দেখা গেছে লো টেস্টোস্টেরন এর সঙ্গে ডিপ্রেশনের সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ। সবসময় মন খারাপ থাকে। ঘিনঘিনে একটা ভাব। কোন কিছুতেই আনন্দ লাগে না। এমনকি মানুষের সাথে মিশতেও ইচ্ছা করে না। ল্যাক অফ ড্রাইভ এন্ড ফোকাস। যা আগে আগ্রহ নিয়ে করা যেত সেটা এখন আর ভালো লাগে না। কাজে তো মন বসেই না, প্ল্যানিং করতেও ইচ্ছা করে না। আর লক্ষ্য ঠিক করলেও সেটা পারসিউ করার এনার্জি একদমই থাকে না। ইরিটেবিলিটি এন্ড অ্যাঙ্গার। লো টেস্টোস্টেরন অনেক সময় মেজাজ খিটখিটে করে তোলে। অল্প কথায় রাগ উঠে যায় মানুষকে একেবারেই সহ্য হয় না। যার কারণে সম্পর্কেও সমস্যা তৈরি হয়। রিলেশনশিপ ডিসকানেক্ট। টেস্টোস্টেরনের প্রভাব সেক্সুয়াল ডিজায়ার বা লিবিডোর উপরও পড়ে। যদি সেই ইচ্ছা কমে যায় তাহলে একজন পুরুষ তার সঙ্গীর সাথে মানসিক ও শারীরিক সংযোগ পুরোপুরি হারিয়ে ফেলতে পারেন। লোনলিনেস এন্ড আইসোলেশন। অনেক পুরুষ বুঝতেই পারেন না কেন তারা আগের মত সোশ্যাল না। কেন তারা বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের কাছে থেকেও দূরে সরে যাচ্ছেন। সেলফ ডাউট এন্ড নেগেটিভ থটস। আমি কি যথেষ্ট ভালো আমার কোন গুরুত্ব আছে? কেনইবা এসব করছি? এই টাইপের প্রশ্নগুলো ঘুরতেই থাকে মনে এবং ধীরে ধীরে সে নিজেকেই দোষ দিতে শুরু করে।

এতো গেল শুধুমাত্র ক্ষতিকর দিক। এর পিছনে রয়েছে এক বিশাল এজেন্ডা। বিলিয়ন ডলারের খেলা।

একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি। আগের প্রজন্মের পুরুষদের টি লেভেল, টেস্টোস্টেরন লেভেল এত বেশি ছিল কেন? কেন তাদের জীবন এত আলাদা ছিল? মনে কি কখনো প্রশ্ন এসেছে? উত্তর জানতে একটু অপেক্ষা করুন।

আজকের সমাজে পুরুষদের উইক এবং পাওয়ারলেস হতে দেখে মনে হয় যেন একটি শক্তিশালী সিস্টেম সচেতনভাবে তাদের ম্যাসকুলিনিটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। ইটস নট জাস্ট সোসাইটাল অর কালচারাল চেঞ্জ বাট লাইক এন এফর্ট।

এই প্রক্রিয়াটির মধ্যে রয়েছে এডুকেশন সিস্টেম, মিডিয়া এমনকি গভমেন্ট বা প্রাইভেট পলিসিস যা পুরুষদের ফিজিক্যাল, মেন্টাল এবং সোশ্যাল শক্তিকে ধীরে ধীরে দুর্বল করার একটি স্পষ্ট এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। আজকের দিনে যখন পুরুষদের দুর্বলতা এবং ডিসএডভান্টেজ স্পষ্ট হয়ে উঠছে মনে হয় যেন কিছু লোবি বা একটা সিস্টেম তাদের ম্যাসকুলিনিটি ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। যেখানে ছাত্রদের মেন্টাল এবং ফিজিক্যাল শক্তি বিকাশের কথা, সেখানে প্রায়ই তাদের সেনসিটিভিটি এবং প্যাসিভ মাইন্ডসেটকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। যা সাইন্টিফিক স্টাডিজ অনুযায়ী তাদের নিউরোপ্লাস্টিসিটি এবং ফিজিক্যাল রেজিলিয়েন্স উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।

পাবমেডের একটা রিসার্চে দেখা গেছে এই পরিবর্তন তাদের এবিলিটি টু কোপ উইথ স্ট্রেস এবং এনভায়রনমেন্টাল এন্ডিউরেন্স কমিয়ে দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের মেন্টাল স্টেবিলিটি এবং প্রবলেম সলভিং ক্যাপাবিলিটিজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। মিডিয়া আজকাল পুরুষদেরকে সফট এবং উইক হিসাবে উপস্থাপন করছে। জার্নাল অফ মেন স্টাডিজ অনুযায়ী মিডিয়া পুরুষদেরকে শুধু ইমোশনাল এবং প্যাসিভ হিসেবে উপস্থাপন করছে, যা তাদের পুরুষত্বের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে 68% পুরুষ মিডিয়া উপস্থাপনায় নিজেদের দুর্বল এবং কম শক্তিশালী হিসেবে অনুভব করেন। রিসার্চ ফ্রম দ্য ইউনিভার্সিটি অফ মিজরি জানাচ্ছে মিডিয়া পুরুষদেরকে এক সফট চিত্রে উপস্থাপন করতে চাচ্ছে যা তাদের ক্ষমতা এবং শক্তিকে বাধাগ্রস্ত করে।

একদিকে আপনার মেন্টাল উইকনেসকেই প্রমোট করা হচ্ছে, আবার অন্যদিকে পুরুষত্ব আজকাল আক্রমণাত্মক, টক্সিক হিসেবে আইডেন্টিফাই করা হচ্ছে। বিভিন্ন মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন সংগঠন পুরুষত্বকে একটি রোগ হিসেবে দেখা শুরু করেছে। বলা হচ্ছে ম্যাসকুলিনিটি ইজ নট নেসেসারি। সোসাইটি ইজ মুভিং ফরওয়ার্ড।

বিস্টবিটেস্ট হলিউড ডিরেক্টর জেমস… সামথিং সলি আউট অফ হিজ সিস্টেম।

আমাদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের এই পতন কি কেবলমাত্র পরিবেশগত বা সাংস্কৃতিক প্রভাব? পুরুষের প্রাকৃতিক শক্তি, পরিচয় এবং উদ্দেশ্য ধীরে ধীরে কেড়ে নেয়া হচ্ছে। টেস্টোস্টেরন যে শুধুই একটা হরমোন নয়, কিংবা এর বেনিফিট থেকে আমাদের জেনারেশনকে… তারা উইক ম্যান হিসেবে আইডেন্টিফাই করতে পারলেই তাদের পথে কোন বাধা থাকছে না।

নাম্বার ওয়ান: টেস্টোস্টেরন মেকস ইউ রিচার লন্ডন সিটির একটি ব্যাংকের 17 জন ট্রেডারের মধ্যে টানা আট দিন ধরে টেস্টোস্টেরন এবং কর্টিজল (একটি স্ট্রেস হরমোন) এর মাত্রা মাপা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যেসব ট্রেডারের সকালে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি ছিল তারা সেই দিনের ট্রেডিং এ সবচেয়ে বেশি লাভ করেছেন। জন কোর্টস, এ ট্রেডার টার্নড নিউরোসাইন্টিস্ট রিসার্চার, বিলিভস হাই টেস্ট ইজ দ্য সিক্রেট মেকানিজম বিহাইন্ড দিস গেম।

নাম্বার টু: টেস্ট ক্রিয়েটস টপ ম্যান ইন দ্য ওয়ার্ল্ড পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লিডারস, এন্টারপ্রেনারস এবং অ্যাথলেটসদের টেস্টোস্টেরন লেভেলস গড় মানুষের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু কেন? কারণ ডমিনেন্স, কনফিডেন্স এবং ট্র্যাকশন সবকিছুই টেস্টোস্টেরন এর মধ্যে আসে। স্টাডি পাবলিশড ইন… সাজেস্টস হাই টেস্টোস্টেরন লেভেল ইজ কোরিলেটেড উইথ ডমিনেন্ট বিহেভিয়ার এন্ড লিডারশিপ কোয়ালিটিস। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নেতারা যেমন নেপোলিয়ন, জুলিয়াস সিজার কিংবা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট তাদের নেতৃত্বে শক্তি এবং প্রভাব তৈরি করেছে হাই টেস্টোস্টেরনের কারণে। এই হরমোনটি তাদেরকে বেশি ঝুঁকি নিতে, মানুষকে প্রভাবিত করতে এবং কখনো কখনো পুরো পৃথিবীকে বদলে দিতে সক্ষম করেছে। যারা হাই টেস্টোস্টেরনের অধিকারী তারা সাধারণত ডমিনেন্ট বিহেভিয়ার প্রদর্শন করে এবং স্বাভাবিকভাবেই তারা অন্যদের থেকে হয় আলাদা।

এটি শুধু নেতাদের জন্যই নয়, সকল এন্টারপ্রেনারদের ক্ষেত্রেও সত্য। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস এবং স্টিভ জবস এর মত উদ্যোক্তাদের জীবনে এই টেস্টোস্টেরনের কারণে তাদেরকে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে এবং তাদের কনফিডেন্স ও মোটিভেশনের স্তরও কিন্তু ছিল খুবই উঁচু। স্টাডি পাবলিশড ইন নেচার সাজেস্টস হাই টেস্ট লেভেল ইজ কোরিলেটেড উইথ ডমিনেন্ট বিহেভিয়ার এন্ড লিডারশিপ কোয়ালিটিস। হাই টেস্ট ক্যান এনরিচ রিস্ক টেকিং এন্ড ডিসিশন মেকিং এবিলিটিস, বোথ ক্রুশিয়াল ট্রেইটস ফর লিডারস এন্ড এন্টারপ্রেনারস।

এবার আসি ওয়ার্ল্ড ক্লাস অ্যাথলেটদের নিয়ে। স্টাডিজ শো হাই টেস্টোস্টেরন লেভেলস কোরিলেট উইথ মাসল গ্রোথ, স্ট্রেংথ এন্ড রিকভারি স্পিড ইন অ্যাথলেটস। ইম্প্রুভস রিএকশন টাইম এন্ড এগ্রেশন, ক্রিটিক্যাল ফর পারফরমেন্স ইন স্পোর্টস। মাইকেল জর্ডন বা ক্রিস্টিয়ানো রোনালডোর মত কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের পারফরমেন্সের পেছনেও টেস্টোস্টেরন ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এটি তাদের মাসল গ্রোথ, রিকভারি স্পিড এবং রিএকশন টাইম বাড়িয়ে দিয়েছে যা তাদেরকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে।

এগুলো কোন কাকতালীয় ঘটনা নয় যে পৃথিবীর সবচেয়ে সফল, ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী পুরুষদের টেস্টোস্টেরন লেভেলস গড় মানুষের তুলনায় বেশি। কারণ ডমিনেন্স, কনফিডেন্স এবং ট্র্যাকশন সবকিছুই টেস্টোস্টেরন এর মধ্যে একত্রিত হয়ে আসে।

টেস্ট মেকস ইউ মোর অ্যাট্রাক্টিভ স্টাডি পাবলিশড ইন জার্নাল অফ ইভোলুশনারি বায়োলজি ফাউন্ড মেন উইথ হায়ার লেভেল অফ টেস্টোস্টেরন হ্যাভ মোর মাসকুলিন ফেশিয়াল ফিচারস সাচ অ্যাজ স্ট্রং জ-লাইন অ্যান্ড মোর প্রনাউন্সড ফিচারস জেনারেলি অ্যাসোসিয়েটেড উইথ ইনক্রিজড… এই গবেষণা থেকে বোঝা যায় যাদের টেস্টোস্টেরন বেশি তাদের মুখের গঠনও আরো ম্যাসকুলিন হয়। এই পুরুষদের মুখে সাধারণত স্ট্রং জ-লাইন, প্রমিনেন্ট চিকবোন এবং ডিফাইনড ফেশিয়াল ফিচারস থাকে যা মহিলাদের কাছে অধিক আকর্ষণীয়।

2013 স্টাডি পাবলিশড ইন দ্য সাইকোলজিক্যাল সাইন্স জার্নাল কনফার্মড, ওমেন রেটেড মেন উইথ হাই টেস্টোস্টেরন লেভেলস অ্যাজ মোর অ্যাট্রাক্টিভ, স্পেশালি ইন টার্মস অফ দেয়ার ফেশিয়াল ম্যাসকুলিনিটি লেভেল। এটি আপনার শারীরিক গঠনের পাশাপাশি আপনার কনফিডেন্স এবং কারিজমাকেও বৃদ্ধি করে। টেস্টোস্টেরনের প্রভাব পুরুষের মনের শক্তি ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। যার ফলে তারা আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা উচ্চ টেস্টোস্টেরন স্তরের অধিকারী তারা অধিক ডমিনেন্স এবং অ্যাসার্টিভনেস প্রদর্শন করে যা তাদেরকে সোশ্যালি অ্যাট্রাক্টিভ করে তোলে। এই বিশেষত্বই তাদেরকে আরো চিত্তাকর্ষক করে তোলে। শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও। স্টাডিজ প্রুভ, ম্যান উইথ হায়ার টেস্টোস্টেরন লেভেলস হ্যাভ মোর মাসকুলিন ফিচারস দ্যান উইথ লো লেভেলস।

নাম্বার ফোর: টেস্টোস্টেরন মেক্স ইউ হ্যাপিয়ার। কন্ট্রারি টু পপুলার বিলিফ, স্টাডিজ শো হায়ার টেস্টোস্টেরন মেক্স ইউ হ্যাপিয়ার। ইন ফ্যাক্ট, এই রিসার্চে লো টেস্টোস্টেরনে ভুগছে এমন পুরুষদের উপর টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির প্রয়োগ করা হয়। 60 দিন পর দেখা গেল পজিটিভ মুড প্যারামিটারস যেমন এনার্জি, ওয়েলবিং এবং ফ্রেন্ডলিনেস ড্রামাটিক্যালি বেড়ে গেছে। আর নেগেটিভ মুড প্যারামিটারস যেমন রাগ, বিরক্তি এবং নার্ভাসনেস সিগনিফিকেন্টলি কমে গেছে। এই ফাইন্ডিং শুধু পুরনো মিথ গুলোকে ভেঙে দেয় না বরং দেখায় যে টেস্টোস্টেরন শুধু মাসকুলিনিটি বা এগ্রেশনের সিম্বল নয়, বরং ওভারঅল মেন্টাল ওয়েলবিং এবং ইমোশনাল স্টেবিলিটির জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ।

নাম্বার ফাইভ: টেস্টোস্টেরন মেক্স ইউ অ্যা বেটার পারসন। হাই টেস্ট হেল্পস টু মেক ইউ রিচার, মোর অ্যাট্রাক্টিভ, হ্যাপিয়ার, মোর সাকসেসফুল এন্ড অ্যা পারসন উইথ ইনফ্লুয়েন্স, সোশ্যাল ডমিনেন্স, অ্যান্ড পজিটিভ ইফেক্ট। লিডারশিপ কোয়ালিটি এন্ড সেলফ কনফিডেন্স।

এখন জেনে নেই কিভাবে পাঁচটি পিলারের মাধ্যমে আমাদের টেস্টোস্টেরন লেভেলকে হাই লেভেলে নিয়ে যেতে পারি।

পিলার ওয়ান: ডিপ স্লিপ ডিসিপ্লিন। হার্ভার্ড এবং স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে পিক ঘটে ঘুমের রেম পর্যায়ে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যদি আমরা পর্যাপ্ত ঘুম না পাই, তার সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে টেস্টোস্টেরন এর উপর। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় যুবক পুরুষদের উপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তারা এক সপ্তাহ প্রতি রাত্রে মাত্র পাঁচ ঘন্টা ঘুমানোর ফলে তাদের রক্তে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা ১০ থেকে ১৫% পর্যন্ত হ্রাস পায়। সিডিসির মতে, ৩৩% আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি রাতে সাত ঘন্টার কম ঘুমান। দিস ইজ কন্সিডার্ড শর্ট স্লিপ ডিউরেশন। আমাদের স্লিপ প্রটোকল এমন হওয়া উচিত: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম ও একই সময় ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ঘুমানোর আগে নিউরো সাইন্টিস্টদের মতে, সাইন্টিফিক্যালি প্রুভেন মেথডস নিয়ম মেনে ঘুমাতে গেলে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা অতিরিক্ত হারে বেড়ে যায়। আসুন জেনে নেই এই 10-3-2-1-0 সিস্টেমটা আসলে কি:

• 10 ঘন্টা আগে সব ধরনের ক্যাফেইন নেওয়া থেকে বিরত থাকতে।
• তিন ঘন্টা আগে খাবার ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা।
• দুই ঘন্টা আগে স্ট্রেসফুল কাজগুলো ঘুমাতে যাওয়ার আগেই করে ফেলতে হবে।
• এক ঘন্টা আগে ব্লু লাইট স্ক্রিন থেকে দূরে থাকতে হবে। এ সময় আপনি বই পড়তে পারেন। এটা বোরিং মনে হতে পারে, কিন্তু এই বোরিং জিনিসই টেস্টোস্টেরন পুনরুদ্ধারের প্রথম স্টেপ।

পিলার টু: সানলাইট এক্সপোজার। টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে ভিটামিন ডি এর ভূমিকা আজ আর কারো অজানা নয়। 2021 সালের এক গবেষণায় দেখা যায় ইউভিবি রশ্মি টেস্টোস্টেরন বাড়াতে কার্যকর। স্ট্যানফোর্ড নিউরোসাইন্টিস্ট ডক্টর হাবারম্যান বলেন, “সানলাইট ভিউয়িং আরলি ইন দ্য ডে বুস্টস ওয়েকফুলনেস এন্ড হরমোনাল হেলথ।” প্রতিদিন অন্তত 20 মিনিট রোদে দাঁড়ান। এটা সকাল সকাল হলে অনেক ভালো হয়। শুধু সূর্যের আলো নয়, মাসকুলিনিটির জন্য এটা একটা ফুয়েল।

পিলার থ্রি: স্ট্রেস রিডাকশন। হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং জানায়, “প্রলংড স্ট্রেস সাপ্রেসেস রিপ্রোডাক্টিভ হরমোন প্রোডাকশন।” টেস্টোস্টেরন এবং কর্টিজল দুই বিপরীত ধর্মী হরমোন। বেশি স্ট্রেস মানে বেশি কর্টিজল, যার অর্থ কম টেস্টোস্টেরন। হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদী চাপ রিপ্রোডাক্টিভ হরমোন উৎপাদন থামিয়ে দেয়। পাবমেডের একটি গবেষণায় দেখা গেছে মাত্র চার দিনের মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন কর্টিজল লেভেল কমায় ২০%। কোল্ড এক্সপোজার থেরাপি মানে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল কিংবা নেচার ওয়াক করতে পারেন 20 মিনিট। মনে রাখবেন, আপনার মস্তিষ্কই মাসকুলিন মিশনের ব্যাটল ফিল্ড।

পিলার ফোর: কগনিটিভ ফোকাস এন্ড ডিজিটাল ডিসিপ্লিন। আজকের প্রযুক্তি নির্ভর যুগের সবচেয়ে অপ্রকাশিত টেস্টোস্টেরন কিলার হলো ডিজিটাল ওভারইউজ। বিশেষত ডুম স্ক্রলিং, ওভারগেমিং এবং কনস্ট্যান্ট ডোপামিন হিটস। হার্ভার্ডের গবেষণায় দেখা যায়, এক্সেসিভ স্ক্রিন টাইম অ্যাটেনশন স্প্যান, সেলফ কন্ট্রোল এবং হরমোনাল স্টেবিলিটি নষ্ট করে। ডিজিটাল ডিস্ট্রাকশন একটি ব্রেইন ফগ তৈরি করে যা মোটিভেশন ও ডিসাইসিভনেস কমিয়ে ম্যাসকুলিন ড্রাইভকে দুর্বল করে দেয়। প্রয়োজনে ডোপামিন ডিটক্স নিন। সপ্তাহে অন্তত একদিন সব ধরনের ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন। যেসব জিনিস আপনাকে আনন্দ দেয় কিংবা যেসব জিনিস করলে অতিরিক্ত মাত্রায় ডোপামিন নিঃসৃত হয়, এসব জিনিস থেকে দূরে থাকুন। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

পিলার ফাইভ: সেক্সুয়াল ডিসিপ্লিন। 2003 সালের চাইনিজ স্টাডি ফাউন্ড, টেস্টোস্টেরন লেভেল রিমেইনস স্টেবল ফর দ্য ফার্স্ট সিক্স ডেজ অফ অ্যাবস্টিনেন্স (নো ফ্যাপ)। সপ্তম দিনে টেস্টোস্টেরন ১৪৫% বৃদ্ধি পায়। পর্ন আপনার ডোপামিন হাইজ্যাক করে, এন্ড্রোজেন রিসেপ্টর কমিয়ে টেস্টোস্টেরনের কার্যকারিতা নষ্ট করে।

এই অদৃশ্য যুদ্ধটা আপনার একার। সিস্টেম চায় আপনি দুর্বল, বিভক্ত এবং আসক্ত থাকুন। কিন্তু আপনার শিরায় বইছে পূর্বপুরুষদের শক্তি। প্রতিটি সঠিক সিদ্ধান্ত, সস্তা আনন্দের প্রতি আপনার প্রতিটি ‘না’—এই সিস্টেমের গালে এক-একটি চড়। খেলাটা তারা শুরু করেছে, কিন্তু শেষ করবেন আপনি।